Thursday, October 22, 2009

প্রলাপ - ১, ২, ৩, ৪, ৫

প্রলাপ - ১

শুধু জামা পরলেই লজ্জা ঢাকা যায় না 
অন্তরবাসটাও জরুরী।

প্রলাপ - ২

একটির পর একটি বসন্ত এসেছে
চলেও গেছে চুপিসারে
বুঝিনি কোকিলের কণ্ঠস্বর এত মধুর।

প্রলাপ - ৩
চারদিকে শুধু বিচ্ছিন্নতাবাদের অপলাপ।
আমরা একত্রিত কখন ছিলাম?

প্রলাপ - ৪
অমাবস্যার জ্যোৎস্না গায়ে মেখে
বসে আছি অস্তিত্বের অভ্যর্থনায়
ডুমুর ফুলের ডালি হাতে নিয়ে।

প্রলাপ -৫
কুকুর বেড়ালের লালায় ঠোঁট ভিজে আছে
মানুষ মানুষের চুম্বন ভালোবাসে না।

Monday, October 12, 2009

বিধ্বস্ত ডাইরি


প্রতিদিন দুচারটি শব্দ মাথার মধ্যে ভিড় করে
তারপর;
তারপর  মন ছুঁয়ে আঙ্গুল দিয়ে  বেরিয়ে যায়
আর চিহ্ন রেখে যায়
আমার ডাইরির প্রতিটি পাতায়,
কখনো হয়তো শব্দগুলোর অর্থ থাকে 
কিন্তু খুঁজে দেখা হয়ে উঠে না।

এভাবেই শব্দের পর শব্দ জমা হয়
আরো শব্দ; তারপর শব্দের স্তূপ

একদিন বিধ্বস্ত ডাইরি আবিষ্কৃত হয়
আরশোলা অথবা ইঁদুরের আস্তানা থেকে।
কোনো কালের আমার খুব পরিচিত শব্দগুলো
পরিচিতি হারিয়ে ফেলে।


(মাসিক সৃষ্টি, সেপ্টেম্বর ২০০৫)

Sunday, October 11, 2009

ভগবান

তোমাকে অনেক খোঁজেও পাইনি সর্ব হারার দলে
ভিক্ষুকের ছেড়া ঝুলি, পোড়ে যাওয়া কর্দমাক্ত অন্ন
পাগলের বিকৃত উচ্ছাসে।
ক্ষুদে শিশু; এক হাতে হাতুড়ি আর হাত রক্তাক্ত,
তুমি সেখানেও নিখোঁজ!
নেই যক্ষ্মা রোগীর তামাটে মুখে,
থেতলে যাওয়া দেহে কোন পথভ্রষ্ট পথিকের।
তোমায় খোঁজে খোঁজে যখন অবসন্ন
তখন দেখতে পেলুম ঝাপসা চোখে
তুমি বসে আছ কোন এক ধন কুবেরের মস্ত ঘরে
চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বিলাসিতা নিয়ে
তুমি বন্দি ঐশ্বর্যের কাছে।

প্রকাশিত, মাসিক সৃষ্টি, পূজা সংখ্যা ২০০৫।

Friday, October 9, 2009

হারানো বোন (দিদিমণির স্মৃতিতে)


'' সেটি ছিলো ২০০০ সালের জামাই ষষ্টির দিন। বড়মা ভোর থেকেই নানান তৈয়ারীতে ব্যস্ত ছিলেন আর ওদের অপেক্ষা করছিলেন কারণ তিনি দিদিমণি ও...........................কে নিমন্ত্রণ করেছিলেন। কিন্তু অন্তহীন অপেক্ষা। দিদিমণি এলো না, আর ক খনো আসবেও না। সে স্বামীর হাতে প্রাণ হারিয়েছে।। সেইদিন পর্যন্ত দিদিমণি আমাদের কোন কিছু বলেনি, যদিও আমরা কিছুটা বুঝতাম কিন্তু ওর সমঝতার সাম নে আমাদের ব লার কিছু ছিলো না। ২০০৩ অথবা ২০০৪ সালের কোন এক দিন এই কবিতাটি লিখেছি এবং সেই দিন পর্যন্ত এবং আজো শম্বুক গতিতে মামলা চলছে। খুনি আজো মুক্ত বিহঙ্গের মত ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিষ্ময়কর!!!  কী হবে আমাদের দেশের!!!!''

                          হারানো বোন (দিদিমণির স্মৃতিতে)


তিনশত চৌষট্টি দিনের পর যে দিনটি প্রতিবার আসে
সে আমার বোনের মৃতুদিন।
কিন্তু অন্য আরো দিনের মত সেও চলে যায়
মনের পাশ কাটিয়ে।

অর্দ্ধদগ্ধ কিছু গাড়ি, প লেস্তারা ভাঙ্গা কিছু দোকান;
অথবা মৃত্যু  'আরেকটি বোনের',
হরতাল, আবারও ভাঙ্গচুর, পোড়ানো হয় গাড়ি।
তবু কিছুতেই স্মৃতিতে আসে না
বোনের রক্তাক্ত মুখের হাসি।

এভাবেই যখন সবকিছু ভুলতে বসি
যন্ত্রণা নিয়ে আসে নৃশংসের ছবি; খুনি মুখটার

যে আজো ঘুরে বেড়ায় মুক্ত বিহঙ্গের মত
আর কিছু ডেট, কিছু অশালীন প্রশ্ন কোর্টের।

Thursday, October 8, 2009

শব্দের সাথে কথোপকথন

মৌনতায় দিনগুলো বেশ ভালোই কাটে
মৃত শব্দের মধ্যে শব্দ দিতে দিতে 
নিজেকে ক খনো ক্লান্ত ম নে হয় না।
আসলে 'মৃত মানুষের' চেয়ে মৃত শব্দ ঢের ভালো - 
সাড়া দিলে সাড়া পাওয়া যায়।
আর 'মৃত মানুষগুলো' দিনের প্ র দিন
বছ রের প র ;
এক এক টি যুগ শেষ হয়ে যায়
তবু তাদের মৌনতা ভঙ্গ হয় না। 






Wednesday, October 7, 2009

এ রাত্রির শেষ কোথায়

ভোরের কাগজ রক্তাক্ত
সান্ধ্য সংবাদও রক্ত হোলির বিষন্নতায় ভরা।
তবুও.....................
তবুও বর্ষার বিকেল যখন

সোনালী ঝিলিকে শিহরণ জাগায়
আশায় আশায় বুক বাঁধি - 
কাল রাত্রির পর 
সবুজ, শান্ত, সতেজ একটি পৃথিবীর

কিন্তু.....................
এ রাত্রির যেন ভোর নেই।

Tuesday, October 6, 2009

স্বপ্নেরা স্বপ্ন হয়ে গেছে

স্বপ্নগুলো প্রথমে সবুজ রংয়ের হয়
তারপর ধীরে ধীরে এগুলো গাঢ় হতে থাকে
আর সাথে মিশতে থাকে একে একে -
লাল, নীল, হলুদ - হ রেক রংয়ে স্বপ্ন।
একদিন সব রং মিশে গিয়ে স্বপ্নগুলো সব কালো হয়ে যায়।

আমার স্বপ্নগুলো সব স্বপ্ন হয়ে গেছে

তাইতো উদয়াস্ত নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারি।
                                             
সারাদিন কাজের শেষে সন্ধ্যে বেলায়
যখন স্কুল পালানো ছেলেগুলো খৈনি ডলতে ডলতে আড্ডা দেয়
তখন, আমি শিক্ষিত বেকার ঘরে বসে কবিতা লিখি
আর এমনি করে যৌবনের এক একটি টুকরো ভেঙ্গে পড়ে
ছাঁদ হীন ঘরের দেওয়ালের মতো।